ব্যাকরণ: সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, প্রয়োজনীয়তা, কাঠামো ও ব্যাকরণ চর্চা
ভাষায় কখনও স্বেচারিতা স্থান পেতে পারে না। সেদিক থেকে ব্যাকরণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীতা অপরিসীম। ব্যাকরণের নিয়ম-কানুন জানা না থাকলেও সাধারণ মানুষের মনোভাব প্রকাশ হয়ত সম্ভব হয়। কিন্তু ভাষার মযর্দা রক্ষা করে বিশুদ্ধরূপে প্রয়োগের জন্য ব্যাকরণের আবশ্যকতা রয়েছে। ব্যাকরণ জানা থাকলে ভাষা বিশুদ্ধ রাখা যায় না। মনের ভার প্রকাশের জন্য কথা বলা, লেখা, পড়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে আবশ্যই বিশদ্ধতা রক্ষা করা প্রয়োজন। ব্যাকরণের নিয়ম জানা থাকলেই এই বিশুদ্ধতা রক্ষা সহজ। ভাষার মাধুযর্ময় ও সাথর্ক ব্যবহারের জন্য ব্যকরণ জানতে হয়। ভাষার বিশুদ্ধতার জন্যও ব্যাকরণ জানা আবশ্যক। সাহিত্যের ছাত্রদের জন্যও ব্যকরণের জ্ঞান থাকার গুরুত্ব রয়েছে। ভাষার অভ্যন্তরীণ সৌন্দয প্রত্যক্ষ করার মাধ্যম হল ব্যাকরণ। ভাষা গঠন, নিহিত সাহিত্যরস, শব্দ ব্যবহার ও তার তাৎপয অনুধাবন প্রভৃতি ব্যাকরণের মাধ্যমে লাভ করে সাতিত্যের ছত্ররা সাহিত্য সৃষ্টি ও উপভোগ উপকৃত হয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে ড: মুহম্মদ এনামুল হক মন্তব্য করেছেন, ‘আলো, জল, বিদ্যুৎ , বাতাস প্রভৃইত সম্বন্ধীয় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও কথ্য না জানিয়াও মানুষ বাঁচিয়াছে, বাঁচিতেছে ও বাঁচিবে। কিন্তু, তাই বলিয়া ঐ সমস্ত বস্তু বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্যকে মানুষ অস্বীকার করিয়া বতর্মান সভ্যতার গগন বিচুম্বী সৌধ নিমার্ন করিতে পারা যায় নাই। ব্যাকরণ না জানিয়াও ভাষা চলিতে পারে; কিন্তু ভাষাগত সভ্যতা না হউক, অন্তত ভব্যতার পত্তন বা সমৃদ্ধি হইতে পারে না। ব্যাকরণ না জানিলে ভাষাগত আদর্শ হইতে বিচ্যুত হইতে হয় বলিয়া ভাষা উন্নত প্রকৃতির ভাবের বাহর হইয়া শীলতা সম্পন্ন সাহিত্যের সৃষ্টি কিরেত পারে না। এই জন্যই শিক্ষিত ব্যক্তীর পক্ষে ব্যাকরণ-সম্বন্ধীয় সাধারণ জ্ঞানের সহিত বিশেষ জ্ঞানও আবশ্যক।